তোমাদের জিজ্ঞাসা (পর্ব-১)

তোমাদের জিজ্ঞাসা (পর্ব-১)

‘ষোলো’র ফেসবুক পেইজের ইনবক্সে বা বিভিন্ন পোস্টের কমেন্টবক্সে তোমরা ষোলো-সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্ন করে থাকো। সেখান থেকে বাছাইকৃত প্রশ্নগুলো নিয়ে আমাদের নতুন ধারাবাহিক আয়োজন ‘পাঠকের জিজ্ঞাসা’। তোমাদের বাছাইকৃত প্রশ্নগুলো ধারাবাহিকভাবে এই বিভাগে ছাপা হবে ইনশাআল্লাহ।

প্রশ্ন ১ : ষোলোর জন্মের পটভূমি জানতে চাই

– মাহফুজা হক প্রীতি

উত্তর : গত কয়েক বছর যাবৎ তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ভয়াবহ আকারে নৈতিক অবক্ষয় শুরু হয়েছে। হারাম রিলেশনশীপ, স্ক্রিন-আসক্তি, পড়াশোনার প্রতি অনীহা, হতাশা, আত্মহত্যা, মাদকাসক্তি, কিশোর গ্যাং, বড়দের অসম্মান করার প্রবণতা ইত্যাদি সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে কিশোরদের মধ্যে। কিশোর-তরুণদের অধিকাংশই বেড়ে উঠছে আত্মবিশ্বাসহীন, ভীতু এবং সমাজের অদক্ষ সদস্য হিসেবে। এই সমস্যাগুলোর সমাধান নিয়ে কাজ করার তাড়না অনুভব করি আমরা। বন্ধুর এই পথে বড় ভাই হয়ে তাদের পথ দেখাতে ম্যাগাজিনের পরিকল্পনা করি।

সেই পরিকল্পনা স্বপ্ন থেকে অষ্টপ্রহরে ধরা দেয় ২০২০ এর সেপ্টেম্বরে। সফটকপির মাধ্যমে পথচলা শুরু হয় ‘ষোলো’র। আলহামদুলিল্লাহ, অল্প সময়ের মধ্যেই পাঠকপ্রিয়তা পেতে শুরু করে ‘ষোলো’। কিন্তু আমাদের ম্যাগাজিন যে স্ক্রিনেই আটকে রাখছে কিশোরদের! তাই পাঠকদের স্ক্রিন থেকে সরিয়ে কাগজের পাতায় বুঁদ করতে হার্ডকপির পরিকল্পনা শুরু হয়। অতঃপর ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের এক মাহেন্দ্রক্ষণে কাগজের পাতায় আত্মপ্রকাশ করে ‘ষোলো’। সেই ধারাবাহিকতায় ‘ষোলো’ আজও তোমাদের সঙ্গী হয়ে আছে। ইনশাআল্লাহ, এই সফর জান্নাত অবধি চলতে থাকবে।

প্রশ্ন : অন্যান্য ম্যাগাজিনের থেকে ‘ষোলো’র দাম এত বেশি কেন?

– তানিয়া আক্তার আনিকা

উত্তর : ‘ষোলো’র দাম যে অনেক বেশি, এটা আমরাও স্বীকার করি। মূলত দুটি কারণে দাম বেশি। প্রথমত, নিজস্ব প্রেস নেই বলে নিউজপ্রিন্ট কাগজে ছাপাতে না পারায় খরচ প্রায় দ্বিগুণ পড়ে যায়। দ্বিতীয়ত, অন্যান্য ম্যাগাজিন লাখ লাখ টাকার স্পনসর বা বিজ্ঞাপন পায়; সেখানে আমরা দুয়েকটা বিজ্ঞাপনের বাহিরে কোনো স্পনসর পেতাম না। তবে সুখবর হলো, আল্লাহর রহমতে চলতি সংখ্যা (৬ষ্ঠ সংখ্যা) থেকে ম্যাগাজিনের দাম কমিয়ে ৫০ টাকায় নিয়ে আসতে পেরেছি। আলহামদুলিল্লাহ। এখন থেকে তোমরা আর বলতে পারবে না যে, ‘ষোলো ভাইয়া, ম্যাগাজিনের দাম এত বেশি কেন?’ হুম!

প্রশ্ন ৩ : প্রতি মাসে ষোলো আসে না কেন? প্রতি মাসে ষোলোকে চাই।

– কাজী আয়েশা আফরিন, ষষ্ঠ শ্রেণি

উত্তর : আমরাও ‘ষোলো’-কে প্রতি মাসে প্রকাশ করতে চাই। কিন্তু আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা বা ঘাটতির জন্য তা করতে পারছি না। ‘ষোলো’ টিমের সদস্য একদমই কম এবং সকলেই ভলান্টিয়ার। নিজেদের পড়াশোনা বা চাকরির পাশাপাশি ম্যাগাজিনের কাজ করি। কেউই এখানে ফুলটাইমার না। স্পনসর পাওয়া সাপেক্ষে কখনো যদি যথেষ্ট ফুলটাইমার স্টাফ হয়, তখন হয়তো প্রতি মাসেই ম্যাগাজিন প্রকাশ হতে পারে ইনশাআল্লাহ।

প্রশ্ন ৪ : ষোলোতে প্রতি সংখ্যায় কিশোর উপন্যাস বা তাদের উপযোগী বইয়ের রিভিউ চাই। আয়নাঘর কিয়ামুল লাইল বই দুটি ষোলোর রিভিউ দেখেই সংগ্রহ করেছিলাম। রিভিউ থাকলে ষোলোরা সংগ্রহ করতে চাইত, ভালো বইয়ের খোঁজ পেত।

– জাফরিন আহমেদ জানভী

উত্তর : শুরুতে আমাদের ‘বুক রিভিউ’ বিভাগ ছিল। এটি আমরা স্বেচ্ছায় করতাম, যেন ‘ষোলো’র পাঠকেরা ভালো বইয়ের সন্ধান পায়। কিন্তু এই রিভিউগুলোকে অনেকে পেইড রিভিউ মনে করতে শুরু করে। তাই এটি বাদ দেওয়া হয়। তোমরা আন্দোলন করলে এটি আবারও চালু করা যেতে পারে ইনশাআল্লাহ।

প্রশ্ন ৫ : ‘ষোলো ম্যাগাজিনকে কীভাবে আরও বিস্তৃত ও সহজলভ্য করা যায়, যাতে সারা বাংলার ষোলো’-দের কাছে পৌঁছে?

– ফাহিম আল ফয়সাল

উত্তর : বাংলার আনাচেকানাচে ‘ষোলো’কে ছড়িয়ে দিতে চাইলে প্রধান ভূমিকা রাখতে হবে তোমাদেরকেই। তোমরা নিজেরা ‘ষোলো’ পড়ে পরিচিতদেরকেও পড়তে দেবে। এতে ষোলোর পাঠক বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া ‘ষোলো’-কে সারাদেশে সহজলভ্য করার জন্য আমরা ৬৪ জেলাতেই প্রতিনিধি নিচ্ছি। পর্যায়ক্রমে দেশের প্রতিটি উপজেলাতেই প্রতিনিধি নেওয়া হবে ইনশাআল্লাহ। এতে করে খুব সহজেই নিজ এলাকাতেই ‘ষোলো’ পেয়ে যাবে তোমরা। পাশাপাশি প্রতিটি জেলায় ও বিভিন্ন স্কুল-কলেজে ‘ষোলো পাঠক ফোরাম’ গঠন করব আমরা। আশা করছি, এভাবেই একদিন ‘ষোলো’ পৌঁছে যাবে ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের আনাচেকানাচে, ইনশাআল্লাহ।

ষোলোকে ছড়িয়ে দিন